“মেয়েরা নাকি কু়ড়িতেই বুড়ি!”—এই প্রাচীন প্রবাদ বহু যুগ ধরে নারীকে বয়স ও সৌন্দর্যের নিরিখে বিচার করার এক সামাজিক প্রবণতা হয়ে উঠেছে। তবে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, মেয়েরা এই সব প্রবাদকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন। কর্মক্ষেত্র হোক বা মত প্রকাশের অধিকার—তাঁদের প্রতিভা, বুদ্ধি এবং সাহস দিয়ে তাঁরা সমাজে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন। তবুও, পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির চোখ রাঙানি আজও থেমে নেই। তারই সাম্প্রতিক প্রমাণ বলিউড অভিনেত্রী জ়রিন খান-এর সঙ্গে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা।

সম্প্রতি জ়রিন খান নিজের একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে আসা মন্তব্যগুলি পড়ছিলেন। সেখানেই এক ব্যবহারকারী তাঁকে কটাক্ষ করে লেখেন, “বিয়ে করে নিন। বুড়ি হয়ে যাচ্ছেন তো!” এই কুরুচিকর মন্তব্য এড়িয়ে না গিয়ে, সপাটে জবাব দেন জ়রিন। এক ভিডিও-বার্তায় অভিনেত্রী বলেন:
“সম্প্রতি নিজের পোস্টের মন্তব্যগুলো পড়ছিলাম। একটা মন্তব্য ছিল সবার থেকে আলাদা। আমাকে বলা হয়, ‘বিয়ে করে নিন, বুড়ি হয়ে যাচ্ছেন।’ আমার প্রশ্ন হল, বিয়ে করে নিলে কি ফের যৌবনে ফিরে যেতে পারব? এর অর্থ কী?”
এই কথার শেষে নিজেই হেসে ওঠেন জ়রিন। তাঁর ব্যঙ্গাত্মক ও কৌতুকময় প্রতিক্রিয়া মুগ্ধ করেছে অনুরাগীদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই জ়রিনের এই জবাবকে প্রশংসা করে বলেছেন, “অভিনেত্রীর মুখে সত্যি কথা”, “সাহসী জবাব”, “এই মানসিকতা বদলানো দরকার”।
এর পাশাপাশি সমাজে ‘বিয়ে’ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জ়রিন খান। তিনি বলেন,
“আমি সত্যিই জানি না, এই মানসিকতা কি শুধু আমাদের দেশেই রয়েছে! না কি এটা সারা বিশ্বের সমস্যা? অদ্ভুত ভাবে বিয়েকেই সব সমস্যার সমাধান বলে মনে করা হয়।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে অভিনেত্রী স্পষ্ট করে দেন, বয়স কিংবা বৈবাহিক অবস্থা কারও ব্যক্তিত্ব বা সাফল্যের মাপকাঠি হতে পারে না।
জ়রিন খানের বক্তব্য শুধুই একক ঘটনা নয়—এটি বর্তমান সমাজে মেয়েদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যমূলক মানসিকতার বিরুদ্ধে এক সাহসী প্রতিবাদ। বয়স নিয়ে, শরীর নিয়ে বা জীবনযাত্রা নিয়ে নারীদের প্রতি কটাক্ষ বন্ধ হওয়া জরুরি।
মেয়েরা আজ সব ক্ষেত্রে সমান ভাবে অংশগ্রহণ করছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাই সময় এসেছে প্রাচীন প্রবাদগুলিকে ইতিহাসে পাঠিয়ে নতুন মানসিকতা গড়ে তোলার।
জ়রিনের কণ্ঠে সেই সাহসী ডাক—যা শুধু একজন অভিনেত্রীর নয়, বরং লক্ষ লক্ষ নারীর মুখপাত্র হয়ে উঠেছে।