রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শ্রী বিশ্বরূপ গোস্বামী রবীন্দ্রসঙ্গীত জগতে ইতিমধ্যেই সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় নাম। গত ১০ই আগস্ট, রবিবার সল্টলেকের ঐকতান প্রেক্ষাগৃহে তাঁর পরিকল্পনা ও একান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক সংগঠন “রূপ-ভানু” এবং পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র, সংস্কৃতি মন্ত্রক, ভারত সরকারের যৌথ উদ্যোগে ২২শে শ্রাবণ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হলো এক অনবদ্য অনুষ্ঠান – “কবির উপহার”।
অনুষ্ঠানের সূচনায় সম্বর্ধনা প্রদান করা হয় বিশিষ্ট কবি ও সম্পাদক শ্রীমতী রিনা গিরিকে। গবেষক শ্রী পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা প্রবন্ধ “কবির উপহার” গান ও পাঠের মাধ্যমে মঞ্চস্থ হয়, যা অনুষ্ঠানের মূল কেন্দ্রে ছিল। প্রবন্ধে আলোচনার সূত্র ধরে উঠে আসে রবীন্দ্রনাথের উপহার দেওয়ার বিভিন্ন কাহিনি – দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, লেডি রাণু মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বনফুল পর্যন্ত বহু ব্যক্তিত্বের প্রসঙ্গ।
বিশ্বরূপ গোস্বামীর কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনে ছিল আবেগ, স্বরলিপি অনুসরণের যথাযথতা এবং সুরের নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ। তাঁর গাওয়া “কাল রাতের বেলা গান এল মোর মনে”, “তুমি নব নব রূপে এসো”, “আমার মনের মাঝে” শ্রোতাদের আবিষ্ট করেছে। বিশেষভাবে “ওগো কাঙাল আমারে” গানটি মুক্তছন্দে সহজ-সরল অথচ গভীর আবেগে পরিবেশিত হয়ে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। তাঁর গায়কি সম্পর্কে যত প্রশংসাই করা হোক না কেন, তা অপ্রতুল বলেই মনে হয়েছে সকলের। শ্রোতাদের প্রত্যাশা- রবীন্দ্রসঙ্গীত জগতে বিশ্বরূপ আরও অনেক নতুন দিশা এনে দেবেন।
অনুষ্ঠানের পাঠ ও গ্রন্থনা করেন শ্রীমতী সুকন্যা সেনগুপ্ত। তাঁর বাচনভঙ্গি, কণ্ঠের ওঠানামা এবং নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ প্রবন্ধকে আলাদা উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। অনুষ্ঠান শেষে শ্রী পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য শ্রোতাদের মননকে সমৃদ্ধ করেছে।
যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন দেবাশীষ হালদার, সৌমেন দত্ত ও পার্থ সেন। আর সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শ্রীমতী শর্মিষ্ঠা পাল।
সন্ধ্যার শেষে দর্শক-শ্রোতাদের অভিমত একটাই – বিশ্বরূপ গোস্বামীর কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভবিষ্যৎ আরও সমৃদ্ধ হবে।
