আজ বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী সেনাসদস্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তাঁর বাসভবনে নৃশংসভাবে তাঁকে হত্যা করে। ইতিহাসের ঘৃণ্যতম সেই হত্যাকাণ্ডে নিহত হন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, ভাই শেখ আবু নাসের, আত্মীয়স্বজন এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
একই রাতে আলাদা অভিযানে বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মনি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্যকেও হত্যা করা হয়। সেদিন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে হত্যা মামলার বিচার শুরু করে। ১৯৯৮ সালে আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬ জনের দণ্ড কার্যকর হয়েছে, ৫ জন এখনও পলাতক।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন হতো।
গত বছরের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই দিনকে কেন্দ্র করে সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে এবং ছয় মাস পর ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়।
ষাটের দশকের শেষ দিকে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির আদর্শিক ভিত্তি গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখো মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে। তাঁর কণ্ঠেই উচ্চারিত হয়েছিল সেই অমর আহ্বান-
“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”